বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৫তম শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ
বিশ্ব অর্থনীতির কঠিন চ্যালেঞ্জের মধ্যেও বাংলাদেশ মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকার অনেকটা ধরে রেখেছে। চলতি বছরও বিশ্বের ৩৫তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। এ নিয়ে টানা তিন বছর ধরে একই অবস্থানে রয়েছে দেশটি।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সাম্প্রতিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। গতকাল একই স্বীকৃতি দিয়েছে কানাডাভিত্তিক অনলাইন প্রকাশনা ‘ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্ট’। অর্থনীতিভিত্তিক এই সংস্থাটির প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৫তম বৃহৎ অর্থনীতি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
আইএমএফ পরিসংখ্যানের উদ্ধৃতি দিয়ে ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্ট ২০২২ সালের ২৯ ডিসেম্বর ‘দ্য টপ হেভি গ্লোবাল ইকোনমি’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এটি মোট দেশীয় পণ্যের (জিডিপি) পরিপ্রেক্ষিতে দেশগুলোকে তালিকাভুক্ত করেছে।
এ বিষয়ে ইউএনবিকে অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি এই পর্যায়ে পৌঁছেছে তার সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং বিগত ১২/১৩ বছরে ৬ প্লাস জিডিপি প্রবৃদ্ধির কারণে। তিনি বলেন, কানাডার প্রকাশনা বাংলাদেশ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এবং বিশ্ব অর্থনীতিবিদরা কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীনও দেশের অব্যাহত প্রবৃদ্ধি পর্যবেক্ষণ করেছেন।
ড. আতিউর বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি হবে ২৮তম বৃহত্তম এবং ২০২৫ সালের মধ্যে এর অর্থনৈতিক পরিমাণ হবে ১ ট্রিলিয়ন ডলার। তিনি বলেন, দেশকে এখন দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন, সুশাসন এবং স্থিতিশীল সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার দিকে নজর দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ গত ১৩ বছরে অবকাঠামোগত উন্নয়নে তার মোট বাজেটের প্রায় ১২ শতাংশ ব্যয় করেছে। যা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, র্যাপিড ম্যাস ট্রানজিট, কর্ণফুলী টানেল এবং ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়নসহ মেগা প্রকল্পে অবদান রেখেছে।’ ফলে শহর ও গ্রামাঞ্চলে একটি অর্থনৈতিক বিস্ফোরণ ঘটছে।
আইএমএফের প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশে এ বছর বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ৭ শতাংশ, যা আগের বছর ছিল ৬.০ শতাংশ। মোট জিডিপি ৪৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৬৪৬ মার্কিন ডলার। এ তালিকার প্রথম পাঁচটি দেশের মধ্যে তিনটিই এশিয়ার। তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চীন। তাদের বার্ষিক জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। চতুর্থ স্থানে রয়েছে জাপান। দেশটির প্রবৃদ্ধির হার দশমিক ৯ শতাংশ। মোট জিডিপি ৪ দশমিক ১১ ট্রিলিয়ন ডলার। মাথাপিছু আয় ৩৩ হাজার ডলার।
তালিকার পঞ্চম স্থানে রয়েছে ভারত। দেশটির বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ৮ শতাংশ। মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৭৩১ মার্কিন ডলার।
এ তালিকায় বলা হয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ আমেরিকা। এ বছর দেশটির জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ২.৭ শতাংশ। আর জিডিপি ২৮.৭৮ ট্রিলিয়ন ডলার। প্রথম পাঁচের তালিকায় থাকা ইউরোপের একমাত্র দেশ জার্মানি। চলতি বছর জার্মানির বার্ষিক জিডিপির প্রবৃদ্ধি হার ০.২ শতাংশ। তাদের জিডিপি ৪.৫৯ ট্রিলিয়ন ডলারের। মাথাপিছু আয় ৫৪ হাজার ডলার। একটি দেশের অর্থনীতি কতটা শক্তিশালী পরিমাপ করার উপায় হলো জিডিপি।