পুরান ঢাকার পূজার বাজার মন্দা
পুরান ঢাকার শাঁখারিবাজার ও তাঁতিবাজার এলাকায় সারা বছর বিক্রি হয় কাঁসা-পিতল, শাঁখা-সিঁদুর, আগরবাতি, মোমবাতিসহ নানা পণ্য। তবে দুর্গাপূজা এলে এসব পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়। বিক্রি হয় দেদারসে। তবে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে এ বছরের চিত্র উল্টো।
শাঁখা বিক্রেতা চণ্ডীদাস বলেন, ‘দুর্গাপূজাই আমাদের বিক্রির আসল মৌসুম। তবে এবার ব্যবসায় মন্দা, বিক্রি কম। অন্য বছর এ সময় এলে আপনি তো আমাদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগই পেতেন না।’
পূজার সামগ্রী বিক্রেতা বিপুল রায় বলেন, এবার অর্থনৈতিকভাবে মানুষ কিছুটা দুর্বল অবস্থায় আছে তো তাই জিনিসপত্র কিনতে কম আসছে। যারাও আসছে, তারাও আগের বছরের চেয়ে কম বাজেট নিয়ে বাজার করছে।
কাঁসা-পিতলের বিক্রেতা পল্লব দাস বলেন, ‘আমাদের এখানে ভারত থেকে আনা পণ্য বেশি বিক্রি হতো। এবার বর্ডার বন্ধ থাকায় চাহিদামতো মালামাল আমাদের এখানে আসেনি।’
আরেক বিক্রেতার নাম ভোলানাথ ধর। তিনি বলেন, ‘ভারতের মালামাল কম আসায় মজুদকারীরা পণ্যের দাম প্রায় দ্বিগুণ করে ফেলেছেন। ফলে বেশি দাম দিয়ে জিনিস কিনছে না ক্রেতারা।’
মোমবাতি, আগরবাতির বিক্রি করেন সাধনা রায়। তিনি বলেন, ‘প্রতিদিনই হিন্দুদের বাড়িতে পূজার কাজে মোমবাতি, আগরবাতি লাগে। ফলে সারা বছর আমাদের টুকটাক বিক্রি হয়।’
ভোলানাথ ধর বলেন, ‘দুর্গাপূজা ছাড়াও কালীপূজা, লক্ষ্মীপূজা, সরস্বতী পূজাতেও আমাদের বেচাকেনা বেড়ে যায়। তবে সাধারণত দুর্গাপূজার সময়ই ক্রেতাদের ভিড় সবচেয়ে বেশি হয়। বিক্রি অনেক বেড়ে যায়।’
পূজার সামগ্রী বিক্রেতা দীপক ধর বলেন, ‘গত বছরগুলোর তুলনায় এবার বিক্রি প্রায় ৬০ শতাংশ কমে গেছে। পূজার আর কয়েক দিন বাকি আছে। বিক্রি বাড়ার কোনো সম্ভাবনা দেখতেছি না।’
সাভার থেকে শাঁখারিবাজার এসেছেন পল্লব রায় নামের একজন ক্রেতা। তার সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘আমাদের এবার আর্থিক অবস্থা খারাপ, এইটা সত্যি। তবে পূজার সরঞ্জাম কিনতে আমাদের তো শাঁখারিবাজার আসতেই হয়।’
কম বাজেটে হলেও পূজার সরঞ্জাম কিনতেই হবে বলে জানান তিনি।
২২ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে এ বছরের দুর্গাপূজা শুরু হবে।