দৈনিক ১ কোটি ঘনফুট গ্যাস যাবে জাতীয় গ্রিডে
শ্রীকাইল গ্যাসক্ষেত্র থেকে আগামী নভেম্বরে জাতীয় গ্রিডে দৈনিক ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হবে। শ্রীকাইলে এখন তিনটি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন করছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রডাকশন কম্পানি (বাপেক্স)। তিনটি কূপ থেকে প্রতিদিন গড়ে ২৯ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়। নতুন কূপের গ্যাস যুক্ত হলে আরো ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস বাড়বে। আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে নোয়াখালী, ফেনী, হাতিয়া, মিরেরসরাই, সীতাকুণ্ড, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, রাঙামাটি ও কক্সবাজারের একটি অংশ মিলিয়ে তিন হাজার কিলোমিটার টুডি সিসমিক সার্ভের কাজ শুরু করবে বাপেক্স। শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় আগামী অক্টোবর থেকে গ্যাস অনুসন্ধানে যাবে প্রতিষ্ঠানটি। এরই মধ্যে সেখানে সার্ভে সম্পন্ন হয়েছে। আজারবাইজানের রাষ্ট্রীয় কম্পানি সকারের (সকার একিউএস ইন্টারন্যাশনাল ডিএমসিসি) ছেড়ে যাওয়া দুটি গ্যাসকূপও খনন করবে বাপেক্স।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আনিছুর রহমান বলেন, ‘শ্রীকাইলে গ্যাসক্ষেত্রের ওই কূপে মোট ৭১ বিলিয়ন ঘনফুট (বিসিএফ) গ্যাস পাওয়া গেছে। তার মধ্যে ৫০ বিসিএফ গ্যাস উত্তোলনযোগ্য। এখান থেকে যদি প্রতিদিন ১০-১২ মিলিয়ন ঘনফুট করে গ্যাস উত্তোলন করা হয়, তার পরও ১০-১৫ বছর পর্যন্ত গ্যাস উত্তোলন করা যাবে। এখান থেকে সাড়ে সাত কিলোমিটার গ্যাস গ্যাদারিং লাইন করা হবে শ্রীকাইলে, যেখানে মূল গ্যাসক্ষেত্রের প্রসেসিং পয়েন্ট আছে। এটার জন্যও টেন্ডার হয়েছে। মালপত্র চলে আসছে, কাজও শুরু হবে। এ বছরের নভেম্বরের মধ্যেই এ কাজ শেষ করতে পারব। শ্রীকাইল থেকে প্রতিদিন আমরা ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে দিতে পারব। এই মুহূর্তে এটা আমাদের স্বস্তির বিষয়।’
সিনিয়র সচিব আরো বলেন, ‘একই সঙ্গে আমরা আরো অনেক কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। বাপেক্স তিন হাজার কিলোমিটারের আরেকটি বড় কাজ করছে। নোয়াখালী, ফেনী, হাতিয়া, মিরেরসরাই, সীতাকুণ্ড, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, রাঙামাটি ও কক্সবাজারের একটি অংশ মিলিয়ে তিন হাজার কিলোমিটার টুডি সিসমিক সার্ভের কাজ শুরু হবে আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরের দিকে। এ জায়গায়টাকেও একটা সম্ভবানাময় ক্ষেত্র বলা হয়। এই জরিপ শেষ হলে থ্রি-ডি সিসমিক সার্ভে চালানো হবে। এ ছাড়া শরীয়তপুরে নড়িয়া উপজেলায় গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেখানে সার্ভে হয়ে গেছে। সার্ভের ফলাফলে গ্যাস পাওয়া যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। আগামী অক্টোবর থেকে সেখানে অনুসন্ধানে যাব। এ জন্য আমাদের জমি নেওয়া এবং অন্যান্য অবকাঠামো তৈরি করতে হবে। এগুলো সব করছে বাপেক্স। আজারবাইজানের রাষ্ট্রীয় কম্পানি ‘সকার’-এর ছেড়ে যাওয়া বেগমগঞ্জ-৪ ও মাদারগঞ্জ-১ গ্যাস কূপ খনন করবে বাপেক্স। আমরা বাপেক্সকে সম্পূর্ণ কাজে লাগাচ্ছি।’
কুমিল্লার শ্রীকাইল গ্যাসক্ষেত্রের আওতায় ২০১৯ সাল থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার হাজীপুরে ‘শ্রীকাইল ইস্ট-১’ নামে নতুন এ গ্যাস অনুসন্ধান প্রকল্পে কাজ শুরু করে রাষ্ট্রীয় তেল-গ্যাস অনুসন্ধান-উত্তোলন প্রতিষ্ঠান বাপেক্স। চলতি বছরের ৪ মার্চ ‘শ্রীকাইল ইস্ট-১’-এ উত্তোলনযোগ্য গ্যাস পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বাপেক্স।