ঢাকা, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০২৫
আপডেট : ১২ আগস্ট, ২০২০ ২২:১৭

সংকটেও বেড়েছে আমানত: শীর্ষে ট্রাস্ট, সিটি ও ব্র্যাক ব্যাংক

অনলাইন ডেস্ক
সংকটেও বেড়েছে আমানত: শীর্ষে ট্রাস্ট, সিটি ও ব্র্যাক ব্যাংক

নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণে গোটা বিশ্বের মতোই বিপর্যস্ত বাংলাদেশ। দীর্ঘদিন সবকিছু বন্ধ থাকায় স্থবিরতা নেমে এসেছে ব্যবসা-বাণিজ্যে। এর মধ্যেই আবার গত ১ এপ্রিল থেকে ব্যাংকগুলোতে কার্যকর হয়েছে আমনত ও ঋণে যথাক্রমে ৬ ও ৯ শতাংশ সুদহার। ফলে সাম্প্রতিক সময়ে গ্রাহক হারিয়েছে অনেক ব্যাংক। তবে এই সংকটকালেও আমানত প্রবৃদ্ধি বেড়েছে দেশের অনেক বেসরকারি ব্যাংকের।

আজ বুধবার দেশের জাতীয় দৈনিক বণিক বার্তার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাভাইরাসের এ সংকটকালে দেশের বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আমানত প্রবৃদ্ধি হয়েছে ট্রাস্ট ব্যাংকের। এরপরই যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে দ্য সিটি ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্যাংক। তবে অর্থের দিক দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমানত প্রবৃদ্ধি হয়েছে বেসরকারি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের।

সম্প্রতি দেশের ৩০টি বেসরকারি ব্যাংকের আমানতের গতিপ্রকৃতি, জুনভিত্তিক আর্থিক প্রতিবেদন ও তথ্য বিশ্লেষণ এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর শীর্ষ কর্মকতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানায় গণমাধ্যমটি। প্রতিবেদনে বলা হয়, বড় ও ভালো ভাবমূর্তি থাকা ব্যাংকগুলোরই আমানত প্রবৃদ্ধি হয়েছে এ করোনাকালে।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে জুন মাসে ট্রাস্ট ব্যাংকের মোট আমানতের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ হাজার ২৮৬ কোটি টাকায়। এর আগে গত বছরের শেষে ব্যাংকটির মোট আমানতের পরিমাণ ছিলো ২৪ হাজার ১৮২ কোটি টাকা। অর্থাৎ চলতি বছরের প্রথমার্ধে ব্যাংটির আমানত প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১২ দশমিক ৮৩ শতাংশ।

জানা যায়, চলমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে সরকারি কিছু বড় প্রকল্পের অর্থ ব্যাংকটিতে জমা হওয়ায় এমন প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তবে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফারুক মঈউদ্দীন জানান, এ ব্যাংকের কর্পোরেট সুশাসন অনেকটা শক্তিশালী। এছাড়া ব্যাংকের অন্যতম উদ্যোক্তা হলো সেনা কল্যাণ ট্রাস্ট। তাই ব্যাংকের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস ও আস্থার কারণে করোনার এ সংকটেও আমানত জমা রাখছেন গ্রাহকরা।

ট্রাস্ট ব্যাংকের এডি রেশিও ৮০ শতাংশের কম উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, গ্রাহকদের স্থায়ী আমানত জমা রাখার ক্ষেত্রে তাদের ৫ শতাংশের বেশি সুদ দেওয়া হচ্ছে না। তারপরও গ্রাহকরা অন্যান্য ব্যাংক থেকে আমানত তুলে ট্রাস্ট ব্যাংকে জমা রাখছেন। তবে আমানত প্রবৃদ্ধির পেছনের সরকারি কিছু প্রকল্পের অর্থ জমা রাখারও ভূমিকা রয়েছে।

চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ১১ দশমিক ৪৪ শতাংশ আমানত প্রবৃদ্ধি হয়েছে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা দ্য সিটি ব্যাংকের। অর্থের হিসেবে যা ২ হাজার ৮২১ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে ব্যাংটির এমডি মাসরুর আরেফিন বলেন, সিটি ব্যাংকের প্রতি আস্থার কারণেই গ্রাহকরা কম সুদেও এখানে আমানত জমা রাখছেন। এর কারণেই আমানতের প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। গ্রাহকরা আমানত জমা রাখার ক্ষেত্রে ভালো ও ভিত মজবুত এমন ব্যাংককে বেশি নিরাপদ মনে করেন। তাই অনেক ব্যাংকে বেশি সুদ পাওয়া সত্ত্বেও গ্রাহকরা কম সুদে সিটি ব্যাংকে আমানত জমা রাখছেন।

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ১১ দশমিক ২০ শতাংশ আমানত প্রবৃদ্ধি হয়েছে তৃতীয় অবস্থানে থাাকা ব্র্যাক ব্যাংকের। চলতি বছরের প্রথমার্ধে এ ব্যাংকের আমানত বেড়েছে ৩ হাজার ৩৩৭ কোটি টাকা।

তবে অর্থের দিক দিয়ে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ আমানত বেড়েছে ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের। চলতি বছরের প্রথমার্ধে ব্যাংকটির আমানত বেড়েছে ৫ হাজার ৫২৮ কোটি টাকা। তবে ব্যাংকটির আমানত প্রবৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ। এজেন্ট ব্যাংকিং ও বিপুল পরিমাণে রেমিট্যান্স আহরণের কারণে ব্যাংকটির এত বেশি পরিমাণ আমানত প্রবৃদ্ধি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এছাড়া করোনাভাইরাসের এ সংকটকালে আরো বেশ কয়েকটি ব্যাংকের আমানত প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। ৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ আমানত প্রবৃদ্ধি হয়েছে পূবালী ব্যাংকের, ৬ দশমিক ৮১ শতাংশ ব্যাংক এশিয়ার, ৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ প্রাইম ব্যাংকের। সাউথইস্ট ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক, এসআইবিএল ব্যাংকের আমানত প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ শতাংশের বেশি। প্রিমিয়ার, ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউসিবি ব্যাংকের আমানত প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ শতাংশের বেশি।

 

উপরে